অষ্টম শ্রেণীর বাংলা সাজেশন ২০২৫: তৃতীয় ইউনিট টেস্টের সম্ভাব্য প্রশ্নপত্র
অষ্টম শ্রেণির তৃতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন বাংলা 2025 – সম্পূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর
ক্লাস 8 বাংলা 3য় ইউনিট পরীক্ষার সাজেশন 2025 শিক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করে। এতে Class Eight Bangla Question Paper 2025 with Answers অন্তর্ভুক্ত থাকায় শিক্ষার্থীরা সহজেই প্রস্তুতি নিতে পারে। এছাড়া অষ্টম শ্রেণীর বাংলা সাজেশন ২০২৫ ও Class 8 Bengali 3rd Unit Test Question Paper 2025-এর মাধ্যমে পরীক্ষার মূল প্রশ্নপত্র ও সম্ভাব্য প্রশ্নসমূহ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। বিশেষভাবে অষ্টম শ্রেণির তৃতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন বাংলা এবং অষ্টম শ্রেণি বাংলা তৃতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন প্রশ্নপত্র 2025-এর বিস্তারিত বিশ্লেষণ শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার জন্য আত্মবিশ্বাসী করে। এই সম্পূর্ণ গাইডটি ব্যবহার করে ক্লাস 8 শিক্ষার্থীরা তাদের পরীক্ষার প্রস্তুতি সহজ ও কার্যকরভাবে সম্পন্ন করতে পারবেন।
Class 8 Bengali Third Summative Assessment 2025 – Full Questions & Answers
১। সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে বাক্য সম্পূর্ণ করো: ১×১১ = ১১
১.১ দানব-দলনী হয়ে— (সুভাষিণী/সুনয়নী/উম্মাদিনী), আর কি দানব থাকবে?
উত্তর : - উম্মাদিনী
১.২ “চাল তোলো গো মাসিপিসি”— (ব্যান্ডেল/ক্যানিং/লালগোলা বনগাঁয়) এ ঘটেছে।
উত্তর : - লালগোলা বনগাঁয়
১.৩ প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত সম্পাদিত কবিতা পত্রিকার নাম— (আবহমান/অলিন্দ/সপ্তপদী)।
উত্তর : - অলিন্দ
১.৪ ইসলামপুর ফাঁড়ির গলি দিয়ে যাওয়া যায়— (ভিক্টোরিয়া পার্ক/বাদামতলির ঘাট /নারায়ণগঞ্জের ঘাট) ।
উত্তর : - বাদামতলির
১.৫নাগরাজনের অ্যালবামটি তাকে কে উপহার দিয়েছিলেন ?— (কাকা/রাজরাপ্পার/কামাক্ষী) টা।
উত্তর : - কাকা
১.৬ “হে সু, তোর নাকি বর পাওয়া গেছে?”— (সুকেশিনী/প্রতাপ)।
উত্তর : -
১.৭ ‘বিবেকানন্দ’ শব্দটিতে মোট অক্ষরের সংখ্যা— (২/৩/৪/৫)।
উত্তর : - ৪
১.৮ “ঝিরঝিরে বৃষ্টি”— ‘ঝিরঝিরে’ হল— (সর্বনামের/বিশেষ্যের/ক্রিয়ার) বিশেষণ।
উত্তর : - বিশেষ্যের
১.৯ তিনি কলকাতায় আসছেন সেতার বাজাতে— এর ক্রিয়ার কাল হলো (ঘটমান/পুরাঘটিত/নিত্য)।
উত্তর : - ঘটমান
১.১০ “নীল যে আকাশ = নীলাকাশ”— এটি (তৎপুরুষ/কর্মধারয়/বহুব্রীহি/দ্বন্দ্ব) সমাসের উদাহরণ।
উত্তর : - কর্মধারয়
১.১১ সাধুভাষার একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো— (ক্রিয়ার সংক্ষিপ্ত রূপ/সমাসবদ্ধ পদের ব্যবহার/সর্বনামের সংক্ষিপ্ত রূপ)।
উত্তর : - সমাসবদ্ধ পদের ব্যবহার
২। দু-একটি শব্দে বা একটি বাক্যে উত্তর দাও: ১×১৩ = ১৩
২.১ ঘুমপাড়ানি মাসিপিসি কী ধরতে আসে?
উত্তর : - ট্রেন
২.২ কাকে একটি শক্তিশালী বীজপ্রবাহের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে?
উত্তর : - প্রখ্যাত মার্কিন কবি ল্যাংস্টন হিউজ রচিত ‘স্বাধীনতা’ কবিতা থেকে উদ্ধৃত এই পঙ্ক্তিতে স্বাধীনতার গুরুত্ব বোঝানো হয়েছে। এখানে স্বাধীনতাকে একটি শক্তিশালী বীজপ্রবাহ বলা হয়েছে।
২.৩ ‘ঢোল গোবিন্দের আত্মদর্শন’ নামক গদ্য রচনাটি কোন কবির?
উত্তর : - সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের।
২.৪ ‘Double distillation’-এর অর্থ কী?
উত্তর : - দ্বিপাতনীকরণ।
২.৫ 'ডাকুটার মরণ আর্তনাদ সে শুনতে পেয়েছে' — কাকে ডাকু ভাবা হয়েছে?
উত্তর : - “ডাকুটার মরণ আর্তনাদ” বলতে বোঝানো হয়েছে মাঝি বা সুতা-মজুরদের আশেপাশের দাঙ্গা বা হিংসার মধ্যে যে খুন-নৃশংসতা হচ্ছে, তার জন্য যারা প্রাণ হারাচ্ছে—তাদের।
২.৬ বিধুশেখর শাস্ত্রী ‘বহুভাষাবিদ’ পণ্ডিত হলেও প্রথম জীবনে কোন ভাষায় অনভিজ্ঞ ছিলেন?
উত্তর : - বিধুশেখর শাস্ত্রী ছিলেন একজন ইংরেজি ভাষায় অনভিজ্ঞ টোলের পণ্ডিত।
২.৭ ‘এক পয়সার পান খাওয়াও না কিশোরীদা’ — ‘কিশোরীদা’ কোন চরিত্রে অভিনয় করেছিল?
উত্তর : - ‘কিশোরীদা’ অপুদের গ্রামের যাত্রাদলের একজন বালক অভিনেতা অজয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিল।
২.৮ 'তোর খাতায় তুই কী লিখছিস রে?' — বক্তা কে?
উত্তর : - "তোর খাতায় তুই কি দেখছিস রে?" এই উক্তিটি সর্বজয়া করেছেন।
২.৯ ব্যাসবাক্যসহ সমাস নির্ণয় করো: পাঁচফোড়ন।
উত্তর : - পাঁচটি ফোড়নের সমাহার (সমাহার দ্বিগু সমাস)।
২.১০ ‘আমি ভুটান যাব এবং তিনদিন থাকব।’ — বাক্যটি থেকে সংযোজক অব্যয়টি বেছে দাও।
উত্তর : - এবং
২.১১ 'আজকের মধ্যেই রাজহাঁসের ডিম জোগাড় করতে না পারলে তো গেছি।' — বাক্যটিকে চলিত রীতি থেকে সাধু রীতিতে প্রকাশ করো।
উত্তর : - আজকের মধ্যেই রাজহাঁসের ডিম সংগ্রহ করতে না পারিলে তো গিয়াছি।
২.১২ প্রবাদটির অর্থ লিখো: “নুন আনতে পান্তা ফুরোয়।”
উত্তর : - “নুন আনতে পান্তা ফুরায়” — এই প্রবাদটি বোঝায় গরিব সংসারের চরম অভাবের অবস্থা। অর্থাৎ, সংসারের একটি অভাব মেটাতে না মেটাতেই আরেকটি অভাব এসে উপস্থিত হয়। সব সমস্যা সামলাতে না সামলাতেই নতুন সমস্যা এসে পড়ে। গরিবের সংসারের এমনই দুর্বিষহ অবস্থা বোঝাতে এই প্রবাদটি বলা হয়।
২.১৩ 'বুক' শব্দটিকে দুটি ভিন্ন অর্থে প্রয়োগ করে দেখাও।
উত্তর : - বক্ষ : বাবার বুকে হঠাৎ ব্যথা উঠেছে।
সাহস : তোমার দেখছি খুব বুকের পাটা!
গর্ব : তোমার কৃতিত্বে আমাদের বুক ফুলে উঠেছে।
শান্তি : এসির বাতাসে বুকটা জুড়িয়ে গেল।
হতাশ : রিতা ফেল করেছে শুনে তার বাবার বুকটা যেন ভেঙে গেল।
ভীষণ কষ্ট : বন্ধুর মৃত্যুর খবরে আমার বুক ফেটে কান্না আসছিল।
৩। সংক্ষেপে উত্তর দাও (যে-কোনো দুটি) : 2 x 2 = 4
৩.১ "সাল মাহিনার হিসেব তো নেই" — সাল মাহিনার হিসেব নেই কেন?
উত্তর : - কবি তার মাসি পিসি কবিতায় শ্রমজীবী মহিলাদের প্রবল দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকা এই মহিলারা সংসারের ক্ষুধা নিবারণের স্বার্থে, ভোরের আলো ফোটার সাথেই পিঠে চালের বস্তা নিয়ে শিশিরভেজা পথ ধরে ছুটে চলে ট্রেন ধরতে। এই নিরন্তর পরিশ্রমের চাপে তারা ভুলে যায়, সাল-তারিখ-মাস-সময়ের হিসাব। তাই সাল মাহিনার হিসেব নেই ।
৩.২ "বাদিকের বুকপকেটটা সামলাতে সামলাতে" — এখানে "বাদিকের বুকপকেট" বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর : - সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের লেখা "লোকটা জানলই না" কবিতায় বাঁদিকের বুক পকেট’ বলতে গচ্ছিত টাকা বোঝানো হয়েছে।অর্থের প্রতি হিসেবি মানুষটির লালসা মনোভাব বোঝানো হয়েছে।
৩.৩ এবার ঘুরে দাঁড়াও।’ আর ‘এখন ঘুরে দাঁড়াও।'—পঙ্ক্তি দুটিতে ‘এবার’ আর ‘এখন' শব্দ দুটির প্রয়োগের সার্থকতা বুঝিয়ে দাও।
উত্তর : - মানুষ ভাগ্যের হাতে মার খেতে খেতে ক্রমশ পিছন দিকে সরে যাচ্ছে, সরতে সরতে সে কোথায় যাবে? যাবারও তো একটা শেষ আছে, তাই প্রথমবার কবি বলেছেন এবার ঘুরে দাঁড়াও। মানুষকে পরিবর্তন আনতেই হবে, তাই দেরি করার সময় নেই। যেখানে যারা আছে সবকিছুই সেখানে টেনে আনতে হবে। এখন সময় এসেছে, তাই কবি ‘এখন ঘুরে দাঁড়াও' বাক্যটি ব্যবহার করেছেন। কবি ঘুরে দাঁড়ানোর বিষয়টিতে জোর দেবার জন্যই ‘এবার’ ও ‘এখন’ এই দুটি সময়বাচক শব্দকে সার্থকভাবে প্রয়োগ করেছেন।
৪। সংক্ষেপে উত্তর দাও (যে-কোনো দুটি) : - ২ x ২ = ৪
৪.১ “আমার পক্ষে এর উত্তর দেওয়া সুকঠিন”—বক্তা কে? কীসের উত্তর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর : - সুভাষচন্দ্র বসু তাঁর বন্ধু দিলীপকুমার রায়কে এ কথা বলেছেন।
নেতাজি দিলীপকুমার রায়ের লেখা পড়ে অভিভূত। চিঠিটি সুভাষচন্দ্র বসুর হৃদয়কে গভীরভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে। তাঁর মনকে সেই চিঠি এতটাই স্পর্শ করেছে যে, তিনি যেন নতুন এক চিন্তায় অনুপ্রাণিত হয়েছেন। দিলীপকুমারের লেখায় তাঁর মন এমন বিমােহিত হয়ে উঠেছে যে, তাঁর পক্ষে সে চিঠির উত্তর দেওয়া সুকঠিন। এমনকি তিনি এও জানেন, যে তাঁর চিঠি censor হয়ে প্রাপকের কাছে যাবে। তাতে নেতাজির ব্যক্তিমনের গভীর আবেগ ও বেদনা অনেকের সামনে চলে আসবে, যা তিনি কোনােদিন চাননি। তাই এরকম চিঠি তাঁর পক্ষে লেখা সম্ভব নয় বলেই তিনি বলেছেন- “আমার পক্ষে এর উত্তর দেওয়া সুকঠিন।
৪.২ “রবীন্দ্রনাথের সারা জীবনের সাধনা উদ্বৃত্তের সাধনা”—কথকের এমন মন্তব্যের কারণ কী?
উত্তর : - রবীন্দ্রনাথের সারা জীবনই মানব মনের বোঝাপড়া ও আত্মপর্যালোচনার সাধনা দিয়ে কাটে। তিনি দুঃখ-সুখ, বিপদ-সম্ভাবনা ও জীবনের সত্যকে সহজভাবে মেনে নেওয়ার শিক্ষা দেন। তার দৃষ্টিতে মানুষের জীবন হলো অন্তর্দৃষ্টি ও সামাজিক সহমর্মিতার মাধ্যমে পরিপূর্ণ করার প্রক্রিয়া। তাই তাকে বলা হয়, তার সাধনা উদ্বৃত্তের সাধনা।
৪.৩ “তাহাদের জাতি ও পরকাল রক্ষা হইল”—কাদের সম্পর্কে লেখক এই মন্তব্য করেছেন? তাঁর এই মন্তব্যের কারণ কী?
উত্তর : - ছােটোগল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘সুভা' গল্পের প্রশ্নোধৃত অংশে সুভাষিণী বা সুভার পিতা ও মাতা সম্পর্কে লেখক আলােচ্য মন্তব্যটি করেছেন।
ভারতবর্ষীয় সমাজ পুরুষতান্ত্রিক। নারীরা সেখানে উপেক্ষিত, বঞ্চিত। বহু যুগ আগে থেকে এই সমাজ নানাবিধ কুসংস্কার দ্বারা আচ্ছন্ন। অল্পবয়সে কন্যাকে পাত্রস্থ করার রীতি এখানে প্রচলিত। কোনাে কারণে কন্যাদায়গ্রস্ত পিতা যদি তার কন্যাকে পাত্রস্থ করে দায়িত্বমুক্ত হতে না পারত, তাহলে তার সমাজচ্যুত হওয়ার ভয় থাকত। আলােচ্য গল্পে কন্যাদায়গ্রস্ত পিতা বাণীকণ্ঠ তাঁর মূক মেয়ে সুভাকে যৌবনপ্রাপ্ত অবস্থায়ও বিবাহ দিতে না-পারায় একঘরে হওয়ার ভয়ে ভীত হয়ে কলকাতায় গিয়ে তাকে বিবাহ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। নিজেদের জাতিগত ঐতিহ্য, সমাজকে রক্ষা করতে ও পরকাল সুনিশ্চিত করতে কন্যার অক্ষমতার কথা না-জানিয়ে তাকে এক পাত্রের সঙ্গে তাঁরা বিবাহ দিলেন। কন্যা যে বােবা, তা জানালে হয়তাে সারাজীবন তার বিবাহ দেওয়া সম্ভব হবে না, সেইজন্য তাঁরা সুভার অক্ষমতার কথা পাত্রকে জানালেন না। ফলে বিবাহের কিছুদিন পরে সে চিরতরের জন্য স্বামী ও সংসারসুখ থেকে বঞ্চিত হল। সমাজের এই নির্মম প্রথার যূপকাষ্ঠে হৃদয়হীন পিতা বাণীকণ্ঠ ও তার স্ত্রী তাদের কন্যাসন্তানটিকে বলি দিলেন। বিনিময়ে তাদের সামাজিক মর্যাদা ও পরকাল রক্ষা পেল।
৫। সংক্ষেপে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৩ x ১ = ৩
৫.১ ‘তাহার অসুখ একভাবেই আছে’—কার, কোন্ অসুখ? একভাবে থাকার কারণ কী?
৫.২ “এখুনি ঝড় এল বলে— নৌকা ফেরাবি?”—কে, কাকে এই প্রশ্নটি করেছে? ‘নৌকোচালক’ উত্তরে কী বলেছিল?
৬। নিজের ভাষায় যথাযথ উত্তর দাও (যে-কোনো দুটি): ৫×২ = ১০
৬.১ “রেলবাজারের হামগার্ডরা সাত ঝামেলা জোটায়”— এখানে সাত শব্দটির ব্যবহারের কারণ কী? কাদের, কেন এই ঝামেলায় পড়তে হয়? তাদের জীবনের কোন খণ্ড চিত্র কবিতায় ফুটে উঠেছে?
৬.২ “আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ”— আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ আসলে কি ?তাকে এরকম বলার কারণ বুঝিয়ে দাউ। 'লোকটা জন্যই না' পংক্তিটি একাধিক বার ব্যবহারের উদেশ্য কি ?
৬.৩ “তুমি যদি বদলে দিতে না পারো, তাহলে দাঁড়িয়ে মরতে হবে”— ‘তুমি’ বলতে কথক কাকে বোঝাতে চেয়েছেন? তাকে কোন পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে? দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মৃত্যুবরণ করতে হবে কেন ?
৭। নিজের ভাষায় যথাযথ উত্তর দাও (যে-কোনো দুটি): ৫×২ = ১০
৭.১ “ওইটার মধ্যে কী আছে?”— কে এই প্রশ্ন করেছে? প্রশ্নটির মাধ্যমে তৎকালীন সময়ের আতঙ্কের পরিবেশের প্রেক্ষাপট আলোচনা করো।
৭.২ "সাধে কি বিদ্যাসাগর বেথুনের না করিলে কাঁদিয়া ফেলিতেন ?" - বেথুন সাহেবের প্রকৃত নাম কি ? তিনি কোন দায়িত্ব নিয়ে ভারতবর্ষে এসেছিলেন ? তাঁর কোন কাজগুলি বিদ্যাসাগরকে আবেগমথিত করে তুলেছিল ?
৭.৩ “বলটা বুলেটের মতো ছুটে গিয়ে ঢুকে গেল গোলে”— কে গোলটি করেছিল? গোলের পর সমর্থক ও সহ-খেলোয়াড়দের উল্লাসের বিপ্রতীপে গোলদাতার বিষন্নতার রূপটি কিভাবে ফুটে উঠেছে ??
৮। যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও: ৫×১ = ৫
৮.১ “অনেক বুঝাইয়া তবে তাহাকে নিরস্ত করিতে হইল”— কাকে, কোন কাজ থেকে নিরস্ত করা হয়েছিল? প্রসঙ্গ উল্লেখসহ বিশ্লেষণ করো।
৮.২ “রইল ওইখানে, কেউই জানতে পারবে না কোনো কথা”— কোন জিনিসের প্রসঙ্গ এখানে উল্লেখিত হয়েছে? কে সেটি, কীভাবে আবিষ্কার করেছে? বিষয়টি গোপন রাখার কারণ কী?
৯। রচনা (যে-কোনো একটি) : 8
৯.১ "হাসপাতালের সামনে জোরে মাইক বাজানো অমার্জনীয় অপরাধ" — এই মর্মে সচেতনতা গড়ে তুলতে সংবাদপত্রে চিঠি লেখো।
উত্তর : -
ঠিকানা
বিষয়ঃ হাসপাতালের সামনে জোরে মাইক বাজানো অমার্জনীয় অপরাধ
মাননীয় সম্পাদক মহাশয়,
আপনার জনপ্রিয় দৈনিকে একটি গুরুতর সামাজিক সমস্যা সম্পর্কে কিছু বলতে চাই। বর্তমানে প্রায়ই দেখা যায়, হাসপাতালের সামনে অনুষ্ঠান বা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে জোরে মাইক বাজানো হয়। এতে রোগীদের প্রচণ্ড অসুবিধা হয়— অসুস্থ, বৃদ্ধ ও নবজাতক শিশুরা অস্বস্তিতে পড়ে। এমনকি অনেক সময় এই উচ্চ শব্দে রোগীর ঘুম নষ্ট হয়, যা দ্রুত আরোগ্যের পথে বড় বাধা সৃষ্টি করে।
এমন আচরণ কেবল অমানবিক নয়, অমার্জনীয় অপরাধও বটে। সরকারের নির্দিষ্ট আইন থাকা সত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রেই এই নিয়ম লঙ্ঘিত হচ্ছে। তাই প্রশাসনের উচিত এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
আপনার পত্রিকার মাধ্যমে আমি সকলের প্রতি আবেদন জানাচ্ছি— হাসপাতালের সামনে যেন কখনও মাইক বা লাউডস্পিকার ব্যবহার না করা হয়। মানবিকতা রক্ষাই আমাদের প্রথম কর্তব্য।
ধন্যবাদান্তে,
আপনার বিশ্বস্ত
[নাম]
[ঠিকানা]
[তারিখ]
অথবা,
৯.২ "বরেণ্য লেখকের বসতবাটি সংরক্ষণের বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সংবাদপত্রে চিঠি লেখো।"
উত্তর : -
ঠিকানা
বিষয়ঃ বরেণ্য লেখকের বসতবাটি সংরক্ষণের আবেদন
মাননীয় সম্পাদক মহাশয়,
আমি আপনার জনপ্রিয় দৈনিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের প্রতি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। আমাদের রাজ্যের এক বরেণ্য লেখকের ঐতিহাসিক বসতবাটি আজ অবহেলিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এই ঘরেই তিনি তাঁর বহু অমর সাহিত্যকর্ম রচনা করেছিলেন। কিন্তু বর্তমানে বাড়িটির রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।
এই বসতবাটি শুধু একটি বাড়ি নয়, এটি আমাদের সাহিত্য ও সংস্কৃতির জীবন্ত ঐতিহ্য। তাই সরকারের উচিত অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণ করে এই বাড়িটিকে সংরক্ষণ করা এবং একটি স্মারক জাদুঘরে রূপান্তরিত করা, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম লেখকের জীবন ও কর্ম সম্পর্কে জানতে পারে।
আপনার পত্রিকার মাধ্যমে আমি সরকারের এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে এই বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আন্তরিক আবেদন জানাচ্ছি।
ধন্যবাদান্তে,
আপনার বিশ্বস্ত
[নাম]
[ঠিকানা]
[তারিখ]
১০। প্রবন্ধ রচনা করো (যে-কোনো একটি) : ৮
১০.১ বিজ্ঞানমনস্কতা ও কুসংস্কার।
উত্তর : -
“যখনই বিজ্ঞান, লইয়া প্রমাণ তর্জনী তুলিয়া দাঁড়ায়। তখনই কুসংস্কার ছাড়িয়া হুংকার, রাজ্য ছাড়িয়া পালায়।”
অবৈজ্ঞানিক মন: একবিংশ শতব্দীতে পা দিয়েও-আমাদের মন থেকে কুসংস্কারের ভূত যায় নি।, আজও সে আমাদেরকে ভয় দেখায়। কারণ, টিকটিকি ডাকলে অশুভ জ্ঞান করি, হাঁচি পড়লে আমরা থেমে যাই, পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে দইয়ের ফোঁটা পরে যাই। এ সব বিশ্বাস কি আমাদের সংস্কার? না কুসংস্কার?
কুসংস্কার কী?
কুসংস্কার হল মানুষের অন্ধ বিশ্বাস, মিথ্যা ধারণা। ইংরেজিতে একে বলে ‘Superstition’ যা বহুদিন ধরে চলে আসছে-এমন অন্ধ বিশ্বাস মানুষের অজ্ঞতার কারণে কুসংস্কারে পরিণত হয়েছে। বিজ্ঞানের যুগেও মানুষ তন্ত্রমন্ত্র ঝাঁড়ফুক করে ভূত প্রেত, ডাইনি, জিন ইত্যাদি তাড়ায়।
আধুনিকতা ও বিজ্ঞান চেতনা: প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকেই মানুষ প্রকৃতির রহস্য ভেদ করার এবং অবাধ্য প্রকৃতিকে নিজের আয়ত্তে আনার চেষ্টা করছে। তাই প্রাচীন গ্রন্থগুলির মধ্যে আমরা পাই বিজ্ঞান চর্চার কিছু কিছু আভাস। কখনও জ্যোতির্বিজ্ঞানের আভাস, কখনও বা পদার্থবিদ্যার তত্ত্ব আমরা দেখতে পাই ঋকবেদের সূক্তে বা বাইবেলের কবিতায়। আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপে রেনেশাঁসের পরে বিজ্ঞানচর্চার সূচনা দেখা দেয়। মানুষের বস্তু জগতে সুখ স্বাচ্ছন্দ্য এবং আরাম বহন করে আনল বিজ্ঞানের নানা আবিষ্কার। এরই প্রবাহ বেয়ে আমরা পেলাম দ্রুতগামী যন্ত্রচালিত যান, বৈদ্যুতিক আলো, উন্নত সংযোগ ব্যবস্থা, জীবনদায়ী ওষুধ।
অন্ধ বিশ্বাস থেকে মুক্তি পেতে হলে: বিজ্ঞানের ক্রমবর্ধমান প্রসার মানুষের অন্ধবিশ্বাস, অসহায় ধর্ম-আনুগত্যের অচলায়তনে আঘাত হানল। সেই প্রথম মানুষ সন্দেহ প্রকাশ করল ধর্মীয় ব্যাখ্যায়। এই সন্দেহবাদ মানুষকে এগিয়ে দিল যুক্তি-তর্কের দিকে। গড়ে উঠল নতুন এক মূল্যবোধ এবং বিশ্বাস, -মানুষ বুঝল, সব প্রাচীন তত্ত্ব, তথ্য এবং মতবাদই চোখবুজে গ্রহণযোগ্য নয়, বিচার ও যুক্তিশীলতার কষ্টিপাথরে যাচাই করে তবেই গ্রহণীয় হবে সবকিছু। এই সন্দেহের মধ্য দিয়ে মানুষের যথার্থ বিজ্ঞান-যুক্তির প্রতি বিশ্বাসই বৃদ্ধি পেল। কবি Tennyson তাই বলেছিলেন, “There live many faiths in honest doubt’।
অন্ধ কুসংস্কার কাকে বলে?
বিজ্ঞানচেতনার মাধ্যমে প্রকৃতির বিপরীতমুখিতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই অবস্থান করছে কুসংস্কার এবং অন্ধবিশ্বাস। একদিকে যখন চলছে বিজ্ঞানের জয়যাত্রা, অন্যদিকে ইংল্যাণ্ডে তখনও ডাইনি বলে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে অসহায়া নারীদের। ভারতে চলছে সতীদাহ-সহমরণ, চলছে হাঁচি-টিকটিকি, মাদুলি-তাবিজ-কবচ। অতি সুসভ্য সমাজে আজও টিকে রয়েছে এমন ধরনের কত অন্ধবিশ্বাস।
কালো বিড়াল সামনে দিয়ে গেলে সুসভ্য ইউরোপের অনেক লোকই আজও গাড়ি থামিয়ে বসে থাকে। আবার ইংল্যাণ্ডের নাবিকেরা সমুদ্র যাত্রার সময় সঙ্গে করে নিয়ে যায় কালো বিড়াল, কারণ তারা বিশ্বাস করে এই বিডালই তাদের জাহাজডুবি থেকে রক্ষা করবে। আজও অনেক সুশিক্ষিত মানুষ খাওয়ার টেবিলে তেরো জনে খেতে বসেন না। কিন্তু কেন এই মানসিকতা? কী এর উৎস? – এর কারণ মানুষের কুসংস্কার, যা কিছুতেই যেতে চায় না। এমন কিছু ক্ষেত্র আছে যেখানে বিজ্ঞান এখনও যুক্তিগ্রাহ্য ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। এ শতকের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন বলেছিলেন “It is this undefined source of fear and hope which is the genesis of irrational superstition” অর্থাৎ ভয় এবং আশার এই অব্যাখ্যাত উৎস থেকেই অযৌক্তিক কুসংস্কারের সৃষ্টি।
সামাজিক কুসংস্কার, যা এখনো প্রবল: আধুনিক ভারত যদিও বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির পথে এগিয়ে চলেছে, তবু আমাদের দেশ আজও কুসংস্কারের বেড়া জালে আবদ্ধ। আজও ডাইনি হত্যা, শিশু বলির মতো ঘটনা ভারতের বুকে প্রায়শই ঘটে চলেছে। তবু সবচেয়ে বিস্ময়কর এবং লজ্জাজনক বোধহয় ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দের ২১শে সেপ্টেম্বরের ঘটনা। গণেশ মূর্তির দুধপান। পদার্থ বিজ্ঞানের ভাষায় যা পৃষ্ঠটান। বর্তমানে সমুদ্রের জল সুপেয় হওয়ার ঘটনাও কুসংস্কারের পর্যায়ে পড়ে।
শিক্ষিত মানুষের কুসংস্কার: সঠিক অর্থে কুসংস্কার মানে সেইসব আচরণ যা ব্যক্তি ও মানুষের মনে জাগিয়ে তোলে অহিতকর মানসিক অন্ধত্ব! আমাদের দুঃখ এই যে, আমাদের দেশে বিজ্ঞান জেনেও বহু মানুষ কুসংস্কারে আচ্ছন্ন। বৈজ্ঞানিকদের হাতে তাবিজ-কবচ প্রায়ই দেখা যায়। ডাক্তারেরা নির্ভর করেন জ্যোতিষীর ওপরে। জ্যোতিষীর নির্দেশে বহু শিক্ষিত লোক হাতে গ্রহরত্ন ধারণ করে চলেছেন। এঁরা ‘জলপড়া’ খান চোখ বুজে। গুরু চরণামৃত ভক্তির সঙ্গে পান করেন। এইসব কাজের সময় তাঁরা বিজ্ঞানকে দূরে সরিয়ে রাখেন।
উপসংহার: কুসংস্কারের হাত থেকে মানুষকে মুক্তি দেওয়ার ক্ষমতা বিজ্ঞানের নেই, আছে বিজ্ঞানচেতনার। যুক্তি, মুক্তচিন্তা ও কার্যকারণ সূত্রের মিশেলই মানুষকে এক স্বচ্ছ পৃথিবীর সন্ধান দিতে পারে, বলতে পারে- ‘তমসো মা জ্যোতির্গময়ঃ’
১০.২ দেশগঠন ও ছাত্রসমাজ।
উত্তর : -
ভূমিকা – স্বাধীনতা অর্জন করা যত কঠিন, তাকে রক্ষা করা আরও কঠিন। স্বাধীনতার পরে ছ-টি দশক পার করেও আজও আমাদের দেশ দারিদ্র্য এবং নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে পারেনি। কুসংস্কার আর অন্ধবিশ্বাসের যুপকাষ্ঠে বলিপ্রদত্ত দেশের বিরাট সংখ্যক মানুষ। তাই দেশের পুনর্গঠন আজও এক কঠিন লড়াই হয়েই রয়ে গেছে। তীব্র জ্ঞানস্পৃহা, প্রবল সাহস আর অদম্য ইচ্ছাশক্তির সমন্বয়ে ছাত্রছাত্রীরা হতে পারে এই লড়াইয়ের অগ্রণী সেনানী।
নিরক্ষরতা দূরীকরণে ছাত্রসমাজ – নিরক্ষরতা আধুনিক ভারতের অভিশাপ। এখনও এ-দেশের শতকরা চল্লিশ জন মানুষই নিরক্ষর। শিক্ষার আলোয় আলোকিত ছাত্রসমাজ পারে পিছিয়ে থাকা মানুষদের শিক্ষার গুরুত্ব বিষয়ে সচেতন করে তুলতে। এলাকাভিত্তিকভাবে ছাত্ররা কয়েক জন মিলে অবসর সময়ে সাক্ষরতা শিবির পরিচালনা করতে পারে। কিংবা সরকারি উদ্যোগে যে সাক্ষরতা আন্দোলন পরিচালিত হয়, তার সঙ্গেও নিজেদের যুক্ত করতে পারে। জাতির প্রাথমিক ভিত্তি যে শিক্ষা, তার প্রসার ঘটিয়ে দেশ পুনর্গঠনে ছাত্রছাত্রীরা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে।
বিজ্ঞানচেতনা প্রসারে ভূমিকা – জাতির উন্নতিকে পিছনের দিকে টেনে নিয়ে যায় মানুষের অন্ধবিশ্বাস আর কুসংস্কার। ছাত্ররাই পারে তাদের শিক্ষার আলো সমাজের সর্বস্তরে পৌঁছে দিয়ে মানুষের চেতনার মান উন্নত করতে এবং যেসব ভ্রান্ত ধারণা যুগ যুগ ধরে মানুষের মনে বাসা বেঁধে আছে, সেগুলোকে দূর করে মানুষকে যুক্তিনিষ্ঠ, বিজ্ঞানমুখী করে তুলতে। প্রয়োজনে ছাত্ররা এলাকায় কুসংস্কারবিরোধী পদযাত্রা, পোস্টারিং ইত্যাদি করতে পারে। বিজ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গেও তারা যুক্ত হতে পারে। মানুষের মধ্যে সঠিক স্বাস্থ্যবিধি প্রচার করতে, চারপাশের পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন রাখতে কিংবা পরিবেশদূষণ প্রতিরোধে ছাত্রসমাজই পারে উদ্যোগ গ্রহণ করতে।
কৃষিব্যবস্থার উন্নতিতে ভূমিকা – ভারত কৃষিপ্রধান দেশ। ছাত্ররাই পারে কৃষি বিষয়ক আধুনিক ধারণা কৃষকদের কাছে পৌঁছে দিতে। আধুনিক কৃষি-সরঞ্জাম, উন্নতমানের বীজ ও রাসায়নিক সারের খবর ছাত্ররা কৃষককে দিতে পারে। আবহাওয়ার পরিবর্তন বিষয়ে তাদের অবহিত করতে পারে, উৎপাদিত পণ্য বিক্রির যথাযথ জায়গার ধারণাও ছাত্রদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব। মহাজনি ব্যবস্থায় শ্রমের যথাযথ মূল্য না পাওয়া কৃষককুল এভাবে বঞ্চনা থেকে বাঁচার পথ খুঁজে পেতে পারে। শুধু তাই নয়, পঞ্চায়েতের বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ যাতে কৃষকদের কাছে পৌঁছোয়, ছাত্রদের সেদিকেও যত্নবান থাকা উচিত।
নাগরিকতাবোধ সৃষ্টিতে উদ্যোগ – সুষ্ঠু নাগরিকবিধি মেনে চলতে ছাত্ররা সবাইকে সচেতন করতে পারে। জল বা বিদ্যুতের অপচয় বন্ধ করা, এলাকাকে আবর্জনামুক্ত রাখা, ট্রাফিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা ইত্যাদি নানা বিষয়ে ছাত্ররা ব্যক্তিগত বা সংগঠিতভাবে প্রচার অভিযান চালাতে পারে। তারা নিজেদের যুক্ত করতে পারে বিভিন্ন প্রশাসনিক উদ্যোগের সঙ্গেও।
অন্যান্য ভূমিকা – সমাজে সুস্থ সাংস্কৃতিক চেতনাপ্রসারে ছাত্ররা নানা ভূমিকা নিতে পারে। মহাপুরুষদের জন্মদিন, স্বাধীনতা দিবস, বিশ্ব পরিবেশ দিবস ইত্যাদি উদযাপনের ব্যবস্থা করে সমাজে সুস্থ চেতনা তৈরিতে এবং অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ছাত্ররা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিতে পারে। সাম্প্রদায়িকতা, বিচ্ছিন্নতা ইত্যাদি যেসব ধারণা মানুষের জীবনকে তথা জাতিকে বিপন্ন করে, সম্প্রীতি আর সৌভ্রাতৃত্বের কথা বলে ছাত্রছাত্রীরা তার বিরুদ্ধেও লড়াইয়ে নামতে পারে। মানুষের মধ্যে তারা জাতীয়তার প্রসার ঘটাতে পারে।
উপসংহার – একদিকে আত্মপ্রতিষ্ঠার দুর্মর লড়াই, অন্যদিকে সামাজিক প্রত্যাশার চাপে আজকের ছাত্রসমাজ যেন সীমাহীন দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রের সজাগ সৈনিক।
১০.৩ বিদ্যালয় জীবনে খেলাধুলার ভূমিকা।
উত্তর : - ”খেলা মোদের লড়াই করা, খেলা মোদের বাঁচা মরা, খেলা ছাড়া কিছুই কোথাও নাই ।”
ভূমিকা:— ছাত্রজীবন হল ভবিষ্যৎ গঠনের ভিত্তি। ভবিষ্যৎ মানে শুধুই আর্থিক নিশ্চয়তা নয়, সুস্থতারও নিশ্চয়তা। সুস্থ শরীর থাকলে তবেই মানুষ নিজের জীবনকে উপভোগ করতে পারে। তাই সুস্থ ও নীরোগ ভবিষ্যতের জন্য বিদ্যালয় জীবন থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা ও শরীরচর্চার ভূমিকা অপরিহার্য।
শরীরচর্চা ও খেলাধুলা:— ছাত্রজীবন শরীর গঠনের সেরা সময়। এই কারণে অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশের পাঠক্রমেও গৃহীত হয়েছে শরীরচর্চা ও খেলাধুলোর বিষয়টি। ড্রিল, ফুটবল, ক্রিকেট, হাডুডু, যোগব্যায়াম প্রভৃতির মাধ্যমে ছাত্রাবস্থা থেকেই স্বাস্থ্যরক্ষার দিকে উৎসাহিত করে তোলা হয়। শরীরচর্চা ও খেলাধুলো কেবল স্বাস্থ্য গঠন করে না, চারিত্রিক গঠনও সুদৃঢ় করে। খেলোয়াড়সুলভ উদারতা, সুস্থ প্রতিযোগিতা, পারস্পরিক সহযোগিতার অভ্যাস তৈরি করে খেলাধুলা ।
শিক্ষায় খেলাধুলার প্রভাব:— খেলাধুলাকে বাদ দিয়ে সুস্বাস্থ্য ও দৃঢ় চরিত্রগঠন অসম্ভব। খেলার মধ্য দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের শারীরিক ও মানসিক স্ফূর্তি হয়। খেলাধুলা পড়াশোনাতে মন বসানোয় সহায়ক হয়ে ওঠে। এ ছাড়া পড়াশোনা করতে গিয়ে বইতে শেখা তত্ত্ব, যেমন— সৌহার্দ্য, দলগত ঐক্য, মূল্যবোধ, খেলোয়াড়সূচক মনোভাব, হাল-না- ছাড়া ইত্যাদির বাস্তব প্রয়োগ হয় খেলাধুলার মাধ্যমে।
বিদ্যালয়ে খেলাধুলার বাধা:— বিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে খেলাধুলা অন্তর্ভুক্ত হলেও এখনও পর্যন্ত সক্রিয়ভাবে তার প্রয়োগে কিছু বাধা লক্ষ করা যায়। প্রথমত, মাধ্যমিক বা তার সমতুল্য পরীক্ষায় শরীরচর্চা ও খেলা বাধ্যতামূলক না হওয়ায় অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক একে বিশেষ গুরুত্ব দেন না। বিদ্যালয়গুলিতে শরীরচর্চার উপযুক্ত যন্ত্রপাতি বা বিভিন্নরকম খেলাধুলার সরঞ্জাম কেনার উৎসাহ তথা অর্থ—দুই-ই অপ্রতুল। এ ছাড়া বেশিরভাগ বিদ্যালয়ে যথেষ্ট শ্রেণিকক্ষ বা খেলার মাঠ নেই। গ্রামগঞ্জে অথবা শহরে অভিভাবকদের অশিক্ষা অনেকসময়েই মেয়েদের শরীরচর্চা ও খেলাধুলার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। দারিদ্র্যের ফলে ছাত্রছাত্রীদের পুষ্টিকর খাদ্য ও সুষম আহারের অভাব তাদের মধ্যে শারীরিক দুর্বলতা সৃষ্টি করে। ফলে তারা খেলাধুলায় উৎসাহ হারিয়ে ফেলে। যদিও বর্তমানে বিদ্যালয়গুলিতে মিড-ডে-মিল প্রকল্প ছাত্রছাত্রীদের একবেলা সুষম খাদ্যের ব্যবস্থা করেছে, তবুও মাত্র একবেলার আহার তাদের খেলাধুলার উপযুক্ত শক্তি দিতে অসমর্থ।
উপসংহার:— বিদ্যালয় স্তরে খেলাধুলার গুরুত্ব বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। দরকার হলে আবার আগের মতো মাধ্যমিক পর্যন্ত শরীরচর্চা ও খেলাধুলাকে আবশ্যিক বিষয় হিসেবে পাঠক্রমে রাখতে হবে। বিভিন্ন সচেতনতামূলক প্রকল্পের মাধ্যমে অভিভাবকদের ছাত্রজীবনে খেলাধুলার গুরুত্ব বোঝাতে হবে। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বিদ্যালয় স্তর থেকে খেলাধুলায় পারদর্শী ছাত্র বা ছাত্রীকে সন্ধান করে তাকে পুরস্কার দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। তবেই ভারতবর্ষের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সুঠাম স্বাস্থ্য ও নীরোগ জীবনের অধিকারী হতে পারবে।
Enter Your Comment